চালের দাম বাড়ার কারণ জানা নেই জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘চালের দাম কেন বাড়ছে এর সঠিক উত্তর আমার জানা নাই। কেন বাড়ছে সেটি জানতে হবে। কেউ কেউ বলেন চালের দাম বাড়ার কারণ সিন্ডিকেট। কিন্তু সেই সিন্ডিকেট কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো? এর সমাধান আপনাদের কাছেই চাই। আলুর দাম অনেক কম, কৃষকরা উৎপাদিত আলু বিক্রি করতে পারেন না। তাই আমি আলুর দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেট খুঁজছি।’

সিন্ডিকেট করে কি আলুর দাম বাড়নো যাবে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে এগুলো খুবই জটিল সমস্যা। বললেই হবে না সিন্ডিকেটের কারণে চালের দাম বাড়ছে। তার সঠিক কারণ জানতে হবে।’


শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় ব্রি’র মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।


পুষ্টিজাতীয় খাবারের উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘পুষ্টিজাতীয় খাবার উৎপাদনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় যে কার্বোহাইড্রেট সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এর দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ও চ্যালেঞ্জ হলো—পুষ্টিজাতীয় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও তার জোগান দেওয়া। খাদ্য উৎপাদন এবং আমাদের আয় বাড়ানোর জন্য স্বল্প জমিতে ভুট্টা চাষ করতে হবে। শিম, লাউ, টিউলিপ ও ড্রাগনসহ নানা ফল উৎপাদন করতে হবে। কৃষিজমি কিন্তু দিনদিন কমছে। তাই বিজ্ঞানীদের অধিক ফলনশীল শস্য উদ্ভাবন করতে হবে। এজন্য সমন্বিতভাবে আমাদের কাজ করতে হবে।’

এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশে শতকরা ৪০-৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল উৎপাদন করা হবে। দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা সরিষার উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন; যা কৃষকরা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু সরিষার যে উৎপাদন হচ্ছে এটি দিয়ে বাজারে প্রভাব ফেলা যাচ্ছে না। এজন্য এ বছর ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।’

আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশে শতকরা ৪০-৫০ শতাংশ ভোজ্যতেল উৎপাদন করবো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরিষার কদর দেশে কমেনি, মানুষ আবার সরিষায় ফিরে যাবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় সমন্বিত কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছি আমরা। সরিষা দিয়ে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণ করতে চাচ্ছি।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বেনজির আলম ও কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার প্রমুখ।