“কেস স্লিপ ” ও “টু-স্লিপ ” বাণিজ্য বেপরোয়া হলেও কৌশল পাল্টিয়ে  শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে  টোকেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ । মাস শেষে এলাকাভিত্তিক ট্রাফিক বিভাগের কর্মরত টিআই এর হাতে নিদিষ্ট অংকের টাকা ধরিয়ে দিয়ে অবশিষ্ট টাকা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা ভাগ-বাটোয়া করে নিচ্ছে। এমন একটি গুরুতর  অভিযোগ উঠেছে নগরীর মোহরা ও কাপ্তাই রাস্তার মাথায় কর্মরত সিএমপির ট্রাফিক ইন্সপেক্টর টিআই মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে  । 

আগে এই লাইন নিয়ন্ত্রণ করতেন মো. হোসেন। তাদেরকে তাড়িয়ে নতুন করে চট্টগ্রাম অটো রিক্সা অটো টেম্পু চালক সমন্বয় পরিষদের আজাদ, মুজিব, হাতপোড়া আরিফসহ ১৫-২০ জনের একটি টিম রাস্তার মাথা এলাকার অটোরিকশার লাইন দখলে নিয়েছে।ব্যাটারি রিকসা নিয়ন্ত্রণ করে লিটন বেলাল। দখলকারীরা মূলত টিআই মোশারফ হোসেনের লোক বলে অভিযোগ রযেছে।

রাস্তার মাথা মোড় পর্যন্ত অটোরিকশা আনতে মাসে ৬০০ টাকা চাঁদা দিয়ে টোকেন নিতে হয় চালকদের। এর বাইরে রাস্তার মাথা মোড় থেকে যতবার যাত্রী নেবে ততবারই ১০ টাকা করে দিতে হয় লাইন নিয়ন্ত্রকদের।টোকেন না থাকায় গত ১৯শে জানুয়ারী ড্রাইভার রফিককে মারধর করে চট্টগ্রাম অটো রিক্সা অটো টেম্পু চালক সমন্বয় পরিষদের আজাদ, মুজিব, হাতপোড়া আরিফসহ আরো কয়েকজন।

 

একটি সুত্র জানিয়েছে ,নগরীর  প্রবেশদ্বার চান্দগাঁও থানার মোহরা কাপ্তাই রাস্তার মাথা মোড় থেকে অটোরিকশা টেম্পু ও ব্যাটারী চালিত রিকশা শহর ও বিভিন্ন উপজেলা যাতায়াত করে। টোকেন দিয়ে নগরে প্রবেশমুখ  থেকে প্রায় সাত হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে মাসে ৬০-৭০ লাখ টাকা , ৫শতধিক অটোটেম্পু  থেকে মাস টোকেন বাবদ আদায় সাড়ে ৭/৮ লক্ষ টাকা, ১২/১৩ শত ব্যাটারী চালিত রিকশা থেকে  মাস শেষে  টোকেন বাবদ আদায় ৩০ লক্ষ টাকা। সবমিলিয়ে শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে কোটি টাকা চাঁদাবাজি।

অভিযোগ রয়েছে, টিআই মাস শেষে অটোরিকশা থেকে প্রায় দেড়লক্ষ টাকা ,অটোটেম্পু থেকে ১লক্ষ টাকা , ব্যাটারী রিকশা ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা। অবশিষ্ট টাকার একটি অংশ পায় থানা পুলিশ , জনপ্রতিনিধি , রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তিরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কাপ্তাই রাস্তার মাথা  রেল লাইন সংলগ্ন মোড়ে বিছিন্নভাবে দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার অটোরিকশা । মোড়ে অটোটেম্পু সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে থাকে ।  এসব নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ের অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করছে এক শ্রেণির ‘লাঠিয়াল বাহিনী’। কেউ মাসিক টোকেনের মেয়াদ আছে কিনা তা দেখছেন। আবার কেউ গাড়ির সিরিয়াল করে দিচ্ছেন। এর মধ্যে কেউ যেসব অটোরিকশা যাত্রী নিয়েছে সেগুলো থেকে ১০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছেন। যেসব অটোরিকশাচালক টোকেন নেননি সেগুলোকে ট্রাফিক পুলিশকে দেখিয়ে দিয়ে মামলা দিয়ে দেন লাইন নিয়ন্ত্রণকারীদের সদস্যরা। আবার তারা দেখিয়ে দিলে সেসব অটোরিকশা টু করে নিয়ে যায় ট্রাফিক ।


চট্টগ্রাম অটো রিকশা - আটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়ন কাপ্তাই রাস্তা মাথা উপ-পরিষদের সাবেক অর্থসম্পাদক মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, টিআই মোশারফের সহযোগিতায় করে চট্টগ্রাম অটো রিক্সা অটো টেম্পু চালক সমন্বয় পরিষদের আজাদ, মুজিব, হাতপোড়া আরিফরা এখন লাইন নিয়ন্ত্রণ করে। টোকেন না থাকলে গাড়ির ড্রাইভারদের মারধর করে, তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টোকেনের টাকা ভাগ-ভাটোয়া করে ।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার জয়নাল আবেদীনকে মোবাইলে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই,তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


রাস্তার মাথা এলাকায় দায়িত্বরত সিএমপির ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোশারফ হোসেন সকালের চট্টগ্রামকে  বলেন, চাঁদাবাজির সাথে ট্রাফিক পুলিশের কোন সম্পর্ক নেই। গ্রাম সিএনজিগুলো রাস্তার মাথা রেললাইন অতিক্রম করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।