ক্যাশলেস ভূমি অফিস বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলার ভূমি কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা  ১ জুন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। ‘স্মার্ট ভূমি সেবায় ভূমি মন্ত্রণালয়’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন যৌথভাবে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেন।   
জেলা প্রশাসক  আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ মাসুদ কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে জুম প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব  মোঃ খলিলুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ আমিনুর রহমান, এনডিসি, ভূমি সংস্কার বোর্ডের সদস্য শশাঙ্ক ভৌমিক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. মোঃ জাহিদ হোসেন পনির পিএএ, ভূমি সংস্কার বোর্ডের  উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার (উপ-সচিব) মোঃ রেজাউল কবীর ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সেলিম আহমদ।  চট্টগ্রাম জেলার সকল সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও ভূমি কর্মকর্তাবৃন্দ কর্মশালায় অংশ নেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ খলিলুর রহমান বলেন, স্মার্ট ভূমিসেবার মূল অংশীজন হিসেবে দেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করা, স্মার্ট ভূমিসেবা বিষয়ে সকলকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অবগত করা ও ভূমি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজ নাগরিক অধিকারের ব্যাপারে সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করাতে পারবে একমাত্র দক্ষ ও চৌকষ ভূমি কর্মকর্তারা, যাদের প্রশিক্ষিত হওয়া অতীব জরুরী।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, সরকারি সেবাসমূহ এখন জনগণের হাতের মুঠোয়। চট্টগ্রামে ভূমি উন্নয়ন কর দাবী ও আদায় নির্ধারণী  বিষয়ে ও ভূমি মালিক নাগরিক নিবন্ধন  এবং নিবন্ধনের পর সর্বোচ্চ ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের হোল্ডিং যাচাই ও সমন্বয়করণ ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।  
তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই জেলার সকল ভূমি অন্যান্য ক্ষেত্রে যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রে কোন একজন মালিক নিজ অংশের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে চাইলে নামজারির মাধ্যমে আলাদা হোল্ডিং তৈরীর ব্যাপারে বিস্তাারিত নির্দেশনা প্রদান করা হয়।এছাড়াও জমির ব্যবহার ভিত্তিক উন্নয়ন কর আদায়, অগ্রিম পরবর্তী ৩ বছর পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের সুবিধা, সংস্থার ক্ষেত্রে আংশিক ভূমি উন্নয়ন কর আদায় এবং ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমির ক্ষেত্রে ১০ টাকা মওকুফ দাখিলার সুবিধাও থাকছে ।
ডিসি আরও বলেন, বর্তমান সরকার উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ প্রতিষ্ঠা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ রোডম্যাপে ৪টি পিলার যথাক্রমে-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্নেন্স অন্তর্ভূক্ত করে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা চারটি স্মার্ট ভূমিসেবা ‘রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ’, ‘স্মার্ট ভূমি নকশা’, ‘স্মার্ট ভূমি রেকর্ড’ ও ‘স্মার্ট ভূমি-পিডিয়া’ ছাড়াও বেশকিছু ভূমিসেবা ব্যবস্থা ‘স্মার্ট ডিজিটালাইজ’ করা হচ্ছে। ই-নামজারি, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, ডাকযোগে সার্টিফাইড খতিয়ান ও ম্যাপসহ ১৬১২২ নম্বরে কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা প্রদানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সম্পদের দক্ষ ব্যবহার করে তথ্য চালিত উন্নত নাগরিকসেবা প্রদান এবং নাগরিক সেবা গ্রহণের অভিজ্ঞতা আরো বেশি সহজ করতে স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম ডিজাইনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন, ক্লাউড কম্পিউটিং, ড্রোন এবং ইউএভি, রিমোট সেন্সিং, মেশিন ভিশন, বায়োমেট্রিক্সসহ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও ‘রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ’, ‘স্মার্ট ভূমি নকশা’, ‘স্মার্ট ভূমি রেকর্ড’ ও ‘স্মার্ট ভূমি-পিডিয়াসহ স্মার্ট ভূমিসেবা স্থাপনেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাই।