চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সাবেক হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফোরকানকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎচেষ্টার অভিযোগে দুদকের মামলা দাখিলের বিষয়টি পরোয়া না করেই বেতন-ভাতাদির জন্য ফোরকান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করতে থাকেন। এ অবস্থায় সংস্থাটি এ সিদ্ধান্ত নেয়।

হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফোরকানের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম পুঁইছড়ি মৌলভী আবদুল আজিজের বাড়ি। তার বাবার নাম মাহমুদুর রহমান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (আইন) ডা. পরিমল কুমার পাল বলেন, ফোরকানকে প্রশাসনিক কারণে ২০২২ সালের ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি ওই কর্মস্থলে দুই বছরের বেশি সময় ধরে যোগ দেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ফোরকানের কার্যকলাপ শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং সরকারি কর্মচারি বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতি হিসেবে প্রতীয়মান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলা চলমান। এর মধ্যে ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরির মাধ্যমে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাৎচেষ্টার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ফোরকানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তার পরও ফোরকান বেতন-ভাতা তোলার চেষ্টা করছেন। আমরা খুব শিগগির ফোরকানকে সাময়িক বরখাস্ত করব।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. ইফতেখার আহমদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে লিখিতভাবে জানান, ফোরকানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা এবং বিভাগীয় মামলা চলমান। এ অবস্থায় তাকে বেতন-ভাতা দেওয়া যায় কিনা তা জানতে চান তিনি। 

জানা যায়, ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের জন্য ৮টি আইসিইউ বেড ও ৮টি ভেন্টিলেটর ও একটি কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটর কেনে। এসব মালামালের দাম ধরা হয় ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তৎকালীন হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফোরকান ওই টাকার বিলটি উত্তোলনের জন্য বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে একটি ভুয়া বিল দাখিল করেন। কিন্তু বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের কর্মকর্তারা নীরিক্ষাকালে নিশ্চিত হন, বিলটির ব্যয় মঞ্জুরি ভুয়া। কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে ফোরকানকে আটক করে পাঁচলাইশ থানাপুলিশের হাতে সোপর্দ করেন। এ ঘটনা তদন্তে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি ফোরকানকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রতিবেদন দিলে তাকে বদলি করা হয়।