বিগত ১৭ বছর ধরে রাউজানের সাধারণ জনগণ স্বাধীনভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে নি বাকস্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে পুরো রাউজান বাসী জিম্মি অবস্থায় ছিল।
দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছিল। কিন্তু দেখা যায় রাউজানের একটি পক্ষ যারা দীর্ঘ সময় এলাকায় ছিল না, তারাই আজ পতিত আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে তাদেরকে সাথে নিয়ে পুরনো কায়দায় এলাকার বাড়ি ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটতরাজ, চাঁদাবাজি, রাহাজানি ও খুনের সাথে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এতে রাউজানের মানুষ আবারও নিরাপত্তাহীন হয়ে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে।
৫ আগস্ট রাউজান থানায় হামলা করে কারা অস্ত্র লুটপাটের সাথে জড়িত তা প্রশাসন সহ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর অজানা নয়। দিব্যি তারা প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের সাথে প্রশাসনের সখ্যতা দেখে রাউজানের সচেতন এবং শান্তিপ্রিয় জনগণ বিস্মিত।
চাঁদাবাজীর নাম দিয়ে রাউজানের ৪৮ টি ব্রিকফিল্ড থেকে ২ লক্ষ টাকা করে প্রায় কৌটি টাকা চাঁদা তুলে কার হাতে তুলে দিয়েছেন তা সকলে না জানলেও অনেকেই জানে। রাঙ্গামাটি থেকে চট্টগ্রাম গামী কাঠ বোঝায় প্রতি ট্রাক থেকে বন বিভাগের মাধ্যমে ৩০০ টাকা করে চাঁদা কার কাছে যায় এবং গহিরা, রাউজান মুন্সিরঘাটা, নোয়াপাড়া এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও লোকজনের কাছ থেকে চাঁদাবাজির কোটি কোটি টাকা কোথায় গিয়েছে প্রশাসন জানলেও তা জনগণ জানতে চায়। এলাকায় কাদের নেতৃত্বে চাঁদাবাজি চলছে তা প্রশাসন জানলেও রহস্যজনক ভাবে কাউকে গ্রেফতার করছে না।
তারা পশ্চিম গুজরায় ১৫% চাঁদা পরিশোধ না করায় ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। চাহিদা মত চাঁদা আদায় করতে না পেরে তারা সিআইপি ইয়াছিনের বাড়িতে হামলা করে অগ্নিসংযোগ করেছে। সি আই পি ফোরকানের উপর হামলা করেছে। বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের জিম্মি করে চাঁদা আদায় করছে। এইসব চাঁদাবাজী লুটতরাজের টাকা কার হাতে যাচ্ছে তাও সকলের জানে। বড় অংকের চাঁদা নিয়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের বিএনপিতে আশ্রয় দিচ্ছে।
শুধু রাউজানে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি করে ক্ষান্ত হয় নাই, তারা রাউজানের বাইরেও অপকর্মে ব্যস্ত। রাউজান পাহাড়তলী ইউনিয়নের তথাকথিত সাধারণ সম্পাদক দাবিদার মোজাহের আলম নগরীর খুলশিতে এক বাসায় ডিজিএফআইয়ের পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়েছে।
গত ২৪ জানুয়ারি চাঁদা দাবী করে না দেয়ায় রাউজানের নোয়াপাড়ায় আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন পাইকারি সুটকি ব্যবসায়ীকে দিনদুপুরে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। নিহত ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম রাউজান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। দলের পরিচয়ে তথাকথিত ব্যক্তিরা এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং এটাকে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের দলের নেতাকর্মীদের নাম জড়িত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা কঠোর ভাবে হুশিয়ারি করে দিচ্ছি যে, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে পরিকল্পিতভাবে বিএনপি'র কোন পদধারী নেতাকর্মীকে যেন জড়ানো না হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় যে সিসি ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে, সে সিসি ফুটেছ তদন্ত করে আসল হত্যাকারীদের সনাক্ত করার দাবী জানাচ্ছি।
৫ আগস্টের পর থেকে যারা এলাকায় সত্রাস ও চাঁদাবাজীর সাথে জড়িত তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
তারা বিএনপি'র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, সাবেক সাংসদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ গোলাম আকবর খোন্দকারকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এহেন ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
জনাব গোলাম আকবর খোন্দকার আজীবন চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী অপকর্মকে কোন সময় প্রশ্রয় দেয়নি। বরং আজীবন এইসব অপকর্মের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছেন।
,
সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও লুটপাটের ব্যাপারে বিএনপি'র হাইকমান্ড কঠোর অবস্থানে আছে।
সবশেষে বলা যায়, রাউজানে এখন খুব খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমরা রাউজানের জনগণকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, নির্যাতন ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং প্রশাসনকে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানাচ্ছি। আজ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই বক্তব্য রাখেন রাউজান উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।