সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলার ছয় বছর পরে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।  

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট (প্রসিকিউশন) শাখার পরির্দশক জাকির হোসাইন মাহমুদের কাছে এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম মিয়া ।


 
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মামলা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আলমগীর টিপু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি মনসুর আলম, সহ সভাপতি আবদুল মালেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আরমান, প্রচার সম্পাদক সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান ও অপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ অন্য আসামিদের অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে।  

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট (প্রশিকিউশন) পরির্দশক জাকির হোসাইন মাহমুদ।


 তিনি বলেন, দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার জমা দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে আদালতে উত্থাপন করা হবে।


দিয়াজ ইরফান চৌধুরী বড় বোন অ্যাডভোকেট জোবাইদা সরোয়ার নিপা  বলেন, দিয়াজ হত্যা মামলা আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে শুনে আমি জিআরও কাছে গিয়ে ছিলাম। জিআরও এই বিষয়ে জানে না বলেছেন।

মামলায় যদি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে থাকে অবশ্যই আদালতে নারাজি দেওয়া হবে।  
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চবির উত্তর ক্যাম্পাসের নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ। এ ঘটনার তিনদিন পর ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণকাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’বলে শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করে আসছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে আদালতে হত্যা মামলা করেন। জাহেদা আমিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দিয়াজের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজের শরীরে আঘাতজনিত জখমের মাধ্যমে হত্যার আলামত আছে। এর প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড হয়। ওই সময়ে থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নিজেই সেটির তদন্ত শুরু করেন। পরে মামলার তদন্তভার যায় সিআইডির কাছে। সিআইডির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার অহিদুর রহমান তদন্ত শুরুর পর বদলি হন। এরপর থেকে আরও দু’জন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। মামলাটি সিআইডি চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম মিয়া তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।