মেজবাহ উদ্দীন চৌধুরী : চট্টগ্রামে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইপি টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলে সরকারী ,বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামে  বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে।তারা ধরাকে সরা ভাবছে।

অনিবন্ধিত আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেল আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের  ভাবমূর্তি নষ্ট করতে নানা ধরণের  গুজব ছড়িয়ে সরকারী কর্মকতাদের বেকায়দায় ফেলার অপচেষ্টা চলছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে  তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ জরুরি।

অনেক কাঠগড় পুরিয়ে একজন সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা গলায় প্রেস লেখা কার্ড ঝুলিয়ে চলাফেরা করতে দেখা না গেলেও  কিন্তু এই সব আইপি টিভি সম্পাদকদের নেই কোন কর্মদক্ষতা  ও যোগ্যতা ।  নিজেদেরকে সম্পাদক ,বিশেষ প্রতিনিধি ,স্টাফ রির্পোটার ও ভিডিও জার্নালিষ্ট  পরিচয় দিয়ে গলায় প্রেস লেখা কার্ড ঝুলিয়ে নগরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে । তাদের দোর্দন্ড প্রতাপে  সরকারী ,বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের  কর্মর্কতা কর্মচারী,আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিযোজিত সদস্য , রাজনীতিবিদ , সমাজ কর্মীরা ,মার্কেটের ব্যবসায়ী, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে  পড়ুয়া শিক্ষার্থী ,গৃহবধুসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ চরম আতংকে দিনপাত করছে। হঠাৎ করে বোম ও ক্যামরা নিয়ে তথকথিত সম্পাদক ,বিশেষ প্রতিনিধি ,স্টাফ রির্পোটার ও ভিডিও জার্নালিষ্ট হাজির। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করে  ভাইরালের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে ।


আইন অমান্য করে চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থান থেকে আইপি টিভি পরিচালনার নামে চাঁদাবাজি চলছে । এসব প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকতার রীতি-নীতি মানছে না। অনেক ক্ষেত্রে গণ উৎপাতের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভ্রান্তিকর তথ্য-উপাত্ত প্রচার করে বিভিন্ন সময় বিভ্রান্তি তৈরি করছে। যা গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশের অন্যতম অন্তরায়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, পাঁচলাইশ হামজার বাগের অসহায় গৃহবধু রীনা আক্তার ও তার স্বামী ঠিকাদার  আকতার হোসেন প্রকৃত জমির মালিক হলেও ওই আইপি টিভি ২৪টিভি তাদেরকে  ভূমিদস্যু’ বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর প্রচার করে। তাতে আকতার হোসেন ও তার পরিবারের সম্মানহানি হয়েছে ।  সম্মানহানির অভিযোগ   আইপি টিভির সম্পাদক নুরুল আমিন খোকন, প্রতিবেদক সাইফুদ্দিন রমিজ এবং ক্যামেরাম্যান মো. শাকিলের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন আকতার হোসেন নামের ওই ঠিকাদার।


বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি-বিআরটিএ চট্টগ্রাম চট্টমেট্রো-১ সার্কেল থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্ক্র্যাপকরণ বিষয়ে একটি অনিবন্ধিত আইপি টিভিতে  প্রচারিত  সংবাদটি ভুয়া, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত  এমন  একটি অভিযোগ করে বিআরটিএ চট্টগ্রাম ।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে ২০০১, ২০০২, ২০০৩, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে তৈরিকৃত সিএনজি চালিত অটোরিক্সাগুলো সরকারের সব নির্দেশনা মেনে স্ক্র্যাপকরণ করা হয়। তালিকা অনুযায়ী বিআরটিএ’র পরিচালক শফিউজ্জামান ভূইয়া, সিরাজুল ইসলাম,পরিচালক  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে সিএনজি অটোরিক্সগুলো স্ক্র্যাপকরণ করা হয়েছে। স্ক্র্যাপকরণে কোন ধরণের অনিয়মের সুযোগ নেই।

বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ সেবাগ্রহিতাদের সব সময় দালালের ব্যাপারে সর্তক করা হয়। কেননা বিআরটিএ’তে দালালের কোন স্থান নেই। চট্টগ্রাম বিআরটিএ সব সময় দালালমুক্ত সেবাগ্রহিতাদের সেবা দিয়ে আসছে।

 এসব গাড়ি স্ক্র্যাপকরণ করা হয়েছে। সিএনজি অটোরিক্সা মালিকদের কাগজপত্র ইঞ্জিল ও চেসিস নাম্বার যাচাই-বাছাই ও সতর্কতার সহিত বিআরটিএ'র স্ক্রাপকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
 
গত ৩রা এপ্রিল ২৩ সোমবার জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেল সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না। এ সংক্রান্ত একটি বিলও মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইপি টিভিতে সংবাদ পরিবেশন বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক আইপি টিভি নিউজ প্রচার থেকে সরে আসলেও  কিছু কিছু  আইপি টিভি বা ইউটিউব চ্যানেল প্রশাসনের নাকের ডগায় সংবাদ পরিবেশন করছে।

এই নিয়ে চট্টগ্রামের অনেক সিনিয়র সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করলেও প্রশাসন এই সব পাত্তা দিচ্ছে না। থানা প্রশাসনসহ অনেকের সঙ্গে তাদের অন্তরঙ্গতা চোখে পড়ে।