=মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী=

পরিশ্রম আর সততায় শূন্য থেকে শিখরে ওঠা তারুণ্যে উজ্জীবিত সফল শিল্পপতি নিটওয়্যার ম্যানুফাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি ও দেশখ্যাত ফোর এইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক“শিল্পরত্ন” গাওহার সিরাজ জামিল সিআইপি। দেশের সফল শিল্পপতির একজন তিনি।
 

করোনা মহামারীর কবলে বাংলাদেশসহ যখন পুরো বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরণের বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়িয়ে, তখন গাওহার সিরাজ জামিল হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি। ফোর এইচ গ্রুপের অধীনে থাকা সকল কর্মচারী, কর্মকর্তাদের কাজ না থাকলেও বেতন সঠিক সময়ে দিয়েছেন এবং খাদ্য সহায়তা  দিয়েছেন। উনার  প্রতিষ্ঠানের বাইরেও অসহায় দরিদ্র মানুষদের রাশান এম কে ফাউন্ডেশন সহ বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে গোপনে  খাদ্য ও অর্থ সহায়তা দিয়েছেন প্রচার বিমুখ এই মানুষটি।

 

  এ পৃথিবীতে বিখ্যাত ব্যক্তিগণ প্রতিদিন  জন্মগ্রহণ করেন না। তারা আসেন হয়তো শতবর্ষের ব্যবধানে। তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনে পৃথিবীতে রেখে যান অনেক কীর্তিগাঁথা যা মানুষ মনে রাখে সুদীর্ঘ সময়কাল। ভোগ করে এর সুফল।

মেধাবী আত্মপ্রত্যয়ী শিল্পোদ্যোক্তা  গাওহার সিরাজ জামিলের জন্ম চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তার পিতা  ছিলেন চট্টগ্রাম জেলার সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।  শিক্ষাজীবন শেষে তিনি প্রথমে চাকরিতে পরে ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন।

নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ব্যবসা অঙ্গনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন । ৪ বন্ধু মিলে গড়ে তোলেন ‘ফোর এইচ গ্রুপ । শ্রম এবং মেধার সমন্বয়ে  ফোর এইচ গ্রুপ  আজ বাংলাদেশের  শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে  গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন  এই শিল্প গ্রুপ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি এই গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। 
 

উনার গার্মেন্ট ব্যবসায় পরিধি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়েছে। তার প্রতিষ্ঠিত ফোর এইচ  গ্রুপে বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা হাজার হাজার। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করছে ফোর এইচ গ্রুপ । 
 

গাওহার সিরাজ জামিল সকালের চট্টগ্রামকে বলেন, দেশে বর্তমান জনবান্ধব সরকার, মাননীয় প্রধানমণ্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন যে ধরণের অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশটি হবে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি।আমাদের ফোর এইচ গ্রুপ দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখছে। আমরা মনে করি আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিটা কর্মীই প্রতিষ্ঠানের মালিক । আমাদের মালিক-শ্রমিকের সম্পর্ক নই, সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধুত্বের সম্পর্ক।আমাদের শ্রমিক ভাইরা নিজের প্রতিষ্ঠান ভেবে আন্তরিক পরিবেশে কাজ করেন । আমরা পরিশ্রমের মাধ্যমে  টাকা রোজগারে এসেছি এবং  পরিশ্রমী মানুষদের পরিশ্রমের মাধ্যমে টাকা রোজগারের সুযোগ করে দিতে এসেছি। 

তিনি আরো বলেন স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে। এর কারণ, আমাদের জমির পরিমাণ কম। আমরা কাউকে জমি বা সম্পত্তি দিয়ে বড় করতে পারব না। সে ক্ষেত্রে একটাই পথ আছে। সেটা হচ্ছে, গুণগত,মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষ জনশক্তি।প্রজন্মকে যদি সঠিক এবং মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া যায়, তাহলে তারা জাতীয় সম্পদে পরিণত হবে। এতে শিক্ষার মান যেমন বাড়বে অপরদিকে বেকারত্ব দূর হবে। মজবুত হবে দেশের অর্থনীতি। 

 ফোর এইচ ফ্যাশন লিমিটেড জাতীয় রফতানি ট্রফিতে ২০০৫-০৬, ২০০৬-০৭, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ সালে যথাক্রমে স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক, ২০০৮-২০০৯ সালে স্বর্ণ, ২০১১-১২ সালে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। 
এছাড়াও গাওহার সিরাজ জামিল রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

তিনি তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত সিরাজ ফোর এইচ ক্রিকেট একাডেমির মাধ্যমে দেশে ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্রিকেটার গড়ার কাজ করছেন। 

তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আজীবন সদস্য, চট্রগ্রাম আবাহনী ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, ধর্মীয় ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত আছেন।