ফেসবুকের লাখ লাখ ফলোয়ার হঠাৎ হাজারের ঘরে!
বুধবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে ফলোয়ারের সংখ্যা নিয়ে।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর)  রাতেও যাদের ফলোয়ার সংখ্যা ১০ মিলিয়ন বা তার বেশি ছিলো তাদের ফলোয়ার এখন ৯ থেকে ১০ হাজারের কাছাকাছি। এমনকি ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের ফলোয়ারও নেমে এসেছে ৯ হাজারের ঘরে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার ফলোয়ার সংখ্যা ৯ হাজার ৯৯৪। যা গতদিন ছিলো ১১৯ মিলিয়ন।

এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ফলোয়ার বর্তমানে ৯ হাজার ৯০৮ জন। যা আগে ছিলো ১.৮ মিলিয়ন।

 

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ফেসবুক ফলোয়ার বর্তমানে ৯ হাজার ৮৭০, যা আগে ছিলো ২ লাখ ১৬ হাজার। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ফলোয়ার বর্তমানে ৯ হাজার ৮৪৯। যা আগে ছিলো ৮ লাখ ১৩ হাজার।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফলোয়ার সংখ্যা এখন ৯ হাজার ৭৩৭ জন। যা আগে ছিলো ৫০ হাজারের কাছাকাছি।

এছাড়া অন্যান্য প্রায় সব ব্যবহারকারীই ফলোয়ার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে দাবি করছেন।

 

মার্কিন গণমাধ্যম নিউজউইক তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বের কয়েকটি বড় মিডিয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফলোয়ার হারিয়েছে। গত সোম ও মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানগুলোর ফলোয়ারের সংখ্যা আকস্মিকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

এরমধ্যে নিউইয়র্ক টাইসম, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য হিল, ইউএস টুডে, নিউইয়র্ক পোস্ট ও নিউজইউক রেকর্ডসংখ্যক ফলোয়ার হারিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউএসএ টুডে গত সোমবার হারিয়েছে ১৩ হাজার ৭২৩ এবং মঙ্গলবার ১১ হাজার ৩৯২ জন ফলোয়ার হারিয়েছে।

অপরদিকে নিউইয়র্ক টাইমস গত সোমবার হারিয়েছে ৬ হাজার ২২৫ জন ও মঙ্গলবার হারিয়েছে ৪ হাজার ৯৪৪ জন ফলোয়ার।

 

একইভাবে সোমবার নিউইয়র্ক পোস্ট হারিয়েছে ৮ হাজার ২০০ এবং মঙ্গলবার ৪ হাজার ৩৭৮ জন ফলোয়ার।

সোমবার ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের ফলোয়ার হারিয়েছে ৫ হাজার ৮০৪ জন এবং পরের দিন আরো ৪ হাজার ৩৩৭।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম গ্রাউন্ড রিপোর্ট বলছে, কোনো ভুল কিংবা বাগের কারণে অনুসারীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যা থেকে রেহাই পাননি স্বয়ং মার্ক জাকারবার্গও।


বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিন তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেন— ফেসবুকের সুনামিতে আমার প্রায় ৯ লাখ অনুসারী হারিয়ে গেছে, বাকি আছে মাত্র ৯ হাজার।
তবে, এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত ফেসবুকের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কিছু সূত্র এটি বাগের কারণে হয়ে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দ্রুতই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে মেটা কর্তৃপক্ষ।

 

এদিকে মেটার কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এনফোর্সমেন্ট রিপোর্ট বলছে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন সন্দেহজনক বট অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তার আগের তিন মাসে প্রায় ১.৬ বিলিয়ন ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ফেসবুকের হিসেব অনুযায়ী, এ বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে ভুয়া অ্যাকাউন্ট ছিল বিশ্বব্যাপী মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর প্রায় ৫ শতাংশ।

ভুয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে ফেসবুক জানায়, যত বেশি সম্ভব ভুয়া অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের নীতি ভঙ্গকারী অ্যাকাউন্ট, ব্যবসার প্রতিনিধিত্ব করে এমন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট কিংবা পোষা প্রাণীর নামে অ্যাকাউন্ট ভুয়া অ্যাকাউন্টের তালিকায় আছে।