পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট প্রধান পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা  পিপিএম ও পুলিশ পরিদর্শক মর্জিনা আকতার এর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গত রবিবার রাতে পাঁচলাইশ বদনাশাহ মাজার এলাকা হতে নিজের শিশু সন্তানকে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করায়  মা অভিযুক্ত হোসনে আরা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ২৭শে এপ্রিল ধৃত মহিলা আসামী হোসনে আরা বেগম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ০৭ চট্টগ্রামে জনৈক মোঃ রাশেদ, লিমু সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে তার মেয়ে রাশেদা আকতার (১১) কে জোরপূর্বক অপহরন করেছে মর্মে অভিযোগ দায়ের করেন । উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা নং-১১৮/২০২২, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ( /০৩) ৭/৩০ রুজু হয়। আদালত মামলাটি তদন্ত করে পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নিদেশনা দেন।


পিবিআই উপ-পুলিশ পরিদর্শক জাহেদুজ্জামান চৌধুরী ভিকটিম রাশেদা আকতার (১১) কে উদ্ধার করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এর ২২ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি প্রদানের জন্য আদালতে পাঠান। ভিকটিম রাশেদা আকতার আদালতে তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করে যে, সে কানাশাহ মাজারের সামনে ভিক্ষা করত। তার মা হোসনে আরা বেগম পলিথিন দিয়ে তার পা পুঁড়ে দিত। পোঁড়া পা দেখিয়ে মানুষের নিকট হতে ভিক্ষা করে টাকা সংগ্রহ করত। ভিক্ষায় সংগৃহীত টাকা দিয়ে হোসনে আরা বেগম জুয়া খেলত। ভিকটিম রাশেদা আকতার এর ছোট ভাই এক্সিডেন্ট করে পা ভেঙ্গে ফেলায় তার চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন হয়। তখন রাশেদ ও লিমু তার মাকে আর্থিক সহায়তা করে। পরে রাশেদ ও লিমুর বাসায় রাশেদা আকতারকে গৃহকর্মী হিসাবে কাজে দেওয়া হয়। লিমু এ রাশেদ রাশেদা আকতারকে অপহরন করেন এই অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করনে অভিযুক্ত হোসনে আরা বেগম । পরবর্তীতে অনুসন্ধানকালে প্রমাণিত হয় যে, হোসনে আরা বেগম রাশেদ ও লিমুকে মিথ্যা অপহরন মামলা দিয়ে টাকা আদায়ের জন্য আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) ৭/৩০ দায়ের করে। পিবিআই, চট্টগ্রাম মেট্রো হতে নারী ও শিল্প নির্যাতন দমন চট্টগ্রাম প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত প্রতিবেদনটি পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করেন মেয়ে রাশেদা আকতারকে দিয়ে ভিক্ষা বৃত্তি পেশায় জড়ানোর জন্য তার মা হোসনে আরা বেগম এর বিরুদ্ধে শিশু আইন ২০১৩ এর ৭১ ধারা মোতাবেক এসআই পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে বাদী করে এফআইআর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ওসি, পাঁচলাইশ থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন।

 পাঁচলাইশ থানার এসআই নুরুল আলম মিয়া বাদী হয়ে হোসনে আরা বেগমের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ মডেল থানায় ১৯শে নভেম্বর  ২০১২ইং, ধারা- শিশু আইন ২০১৩ এর ৭১ রুজু হয়। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশ পরিদর্শক মর্জিনা আকতারের উপর মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়।
ধৃত মহিলা আসামী হোসনে আরা বেগম কে ১৩ই চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চট্টগ্রামে সোপর্দ করা হয়। মামলাটি তদন্তাধীন।