চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় দুই পাইলট প্যারাসুটে নামতে সক্ষম হলেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈশা খাঁ হাসপাতালে পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদের মৃত্যু হয়।


 
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা  বলেন, বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে একজন পাইলটের মৃত্যু হয়েছে।   এ ঘটনায় আহত কো-পাইলট উইং কমান্ডার সুহান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ওয়াই এ কে-১৩০ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পতেঙ্গা এলাকায় দুর্ঘটনায় পতিত হয়।  

স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ (বিডি/৯৬২৫), জিডি (পি) ২০ মার্চ ১৯৯২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।


তাঁর পিতার নাম ডা. মো. আমান উল্লাহ এবং মাতার নাম নীলুফা আক্তার খানম।
তিনি ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ থেকে বিএসসি (এ্যারো) পাশ করেন।

স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ ১০ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন এবং ০১ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার প্রাপ্তিসহ জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। চাকরিকালীন সময়ে তিনি বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি পেশাদারী দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘মফিজ ট্রফি’, ‘বিমান বাহিনী প্রধান ট্রফি’ও বিমান বাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এছাড়াও ভারতীয় বিমান বাহিনীতে কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘Chief of Air Staff’s Trophy for Best in Flying (Indian Air Force)’ অর্জন করেন।

চাকরিকালীন সময়ে তিনি দেশে-বিদেশে পেশাগত বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সাথে তা সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর্স পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তিনি চীন থেকে ফাইটার পাইলটস ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স, ভারত থেকে অপারেশনাল ট্রেনিং ইন এভিয়েশন মেডিসিন ফর ফাইটার পাইলটস কোর্স, বেসিক এয়ার স্টাফ কোর্স ও কোয়ালিফাইড ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর্স কোর্স সম্পন্ন করেন।

তাঁর কমিশন প্রাপ্তির পর চাকরীকাল ১২ বছর ০৫ মাস ০৯ দিন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৩২ বছর ০১ মাস ২০ দিন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক কন্যা, এক পুত্র, বাবা-মা এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

শোক
স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের মৃত্যুতে গভীর শোক  জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।  

বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবাররের প্রতি সমবেদনা জানান।