চট্টগ্রামের বাঁশখালী চাম্বল ইউনিয়নের আহমদ কবির নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করায় বাদি পরিবারের উপর নির্যাতন, বারবার হামলার কারণে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবারটি। এ সুযোগে বাদির মৎস্য প্রকল্পেে মাছ, চাষের সবজি ও বাড়ি ঘরের জিনিসপত্র লুটপাট করা হচ্ছে।

২ এপ্রিল বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিম চাম্বলের মোহাম্মদ হানিফ এ অভিযোগ করেন। এসময় হামলা, নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে তার ৭০ বছরের বৃদ্ধা মা তাহেরা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হানিফ বলেন, আহমদ কবির এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু। এলাকায় এমন কোন অপরাধ নেই তার সংশ্লিষ্টতা নেই। বিশোরগ্যাং গঠন করে চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ হেন কাজ নেই সে করে না। গত ৩/৪ বছর ধরে আহমদ কবিরের নজর পড়ে আমার পরিবারিক সম্পত্তি ও মৎস্য প্রজেক্টের উপর। এরই ধরাবাহিকতায় আমাদের জায়গাগুলো তাকে বিক্রি করার চাপ দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় অব্যাহতভাবে হুমকি ধমকি দিতে শুরু করে। তারা সম্প্রতি মৎস্য প্রজেক্ট থেকে প্রায় ১০/১৫ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়।

২০২১ সালের ১২ অক্টোবর আহমদ কবিরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার উপর হামলা করে মারাত্মকভাবে আহত করে। একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর আহমদ কবিরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের বসত ভিটা দখলের চেস্টা করে, আমাদের উপর হামলা করে। আমাকে ও আমার স্ত্রীকে হত্যার চেস্টা চালায়। আমরা দুইজন মারাত্মকভাবে আহত হই। শত শত এলাকাবাসীর সামনে আমাকে মারধর করলেও তাদের ভয়ে কেউ টু শব্দটুকু করতে পারেনি। একই কায়দায় ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর  ও ১২ নভেম্বর দুই দফা আমাদের বাড়িতে হামলা চালায় কবির ও তার লোকজন। তারা আমাকে মারধর করে এবং ছুরিকাহত করে। তারা ঘরের টাকা, জিনিসপত্র লুটপাট করে। একই বছরের ২৪ জানুয়ারি আহমদ কবির অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। আমাদের না পেয়ে আমার ৭০ বছর বয়স্ক মা তাহেরা বেগমকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।
২০২৩ সালের ২৩ জুন আমার বোন রহিমা বেগমকে লোহার রড় দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি সন্ত্রাসী আহমদ কবির আমাকে ও মাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। চলতি বছরের ১৪ মার্চ আমাদের জায়গা দখল করে ভূমিদস্যূ কবির দেয়াল ও বসতঘর নির্মাণ করে। ওই জায়গাটি নিয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত (দক্ষিণ) এর আদালতে মিছ মামলা নং- ১৪১৫/২০২১ ইং (বাঁশখালী) দায়ের আছে। এবং  ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৫ ধারা বলবদ ছিল। আদালতের আদেশকে তুয়াক্কা না করে সে দখল প্রক্রিয়া চালালে আমরা প্রতিবাদ করি। এসময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আহমদ কবির ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা আমার বৃদ্ধা মাকে ছুরিকাঘাত করে এবং আমাকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনায়  একটি মামলা দায়ের করলে ১৪ মার্চ দুপুরের পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। পুলিশ তদন্তে আসায় আসামীরা আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়।  আমার বোনকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও মাকে লোহার রড় দিয়ে আবারও পিটিয়ে আহত করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,  গত ১৯ মার্চ এ ঘটনায় আহমদ কবির, সাজ্জাদ হোসেন, নয়ন হোসেন, রব্বত আলীকে আসামি করে বাঁশখালী থানায় রহিমা বেগম একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা তুলে নিতে আমাদের পরিবারের উপর বারবার হামলা করে। এতে ভয়ে আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি।