ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব কেটে যাওয়ার পর পরই আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। কক্সবাজারে ২ লাখ ৫০ হাজার আশ্রিত মানুষের মধ্য থেকে সাড়ে ১২ হাজার ইতিমধ্যে বাড়ি ফিরেছেন।

রোববার (১৪ মে) রাত ৮টায় জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে থাকা উবায়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষদের মধ্যে কিছু কেন্দ্র ত্যাগ করেছেন। প্রায় আড়াই লাখ আশ্রিতের মধ্যে বর্তমানে রয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ২৪৮ জন। লোকজন নিজ ইচ্ছেতে আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করছেন।’


শহরের পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দা আলী আজগর পরিবারের ১১ সদস্য ও ৫টি ছাগল নিয়ে কক্সবাজার পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন গতকাল রাত থেকে। তিনিও আজ বাড়ি ফিরেছেন।

আলী আজগর বলেন, ‘পরিবারের ১১ জন মানুষ নিয়ে স্কুলে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে, তাই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমায় স্বেচ্ছায় বাড়ি ফিরছি। আমাদের মতো অনেকেই নিজ নিজ বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছেন।’


আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব কেটে গেছে জেনে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাড়ি চলে যাবো। কারণ বাড়িতে আমাদের অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র ফেলে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। সেগুলো চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। তাই পরিবারের সকলকে নিয়ে বাড়ি ফিরছি।’

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে গেলেও আমরা আশ্রয়ে থাকা মানুষগুলোকে বাড়ি যেতে বলছি না। বৃষ্টি আর জোয়ার কমে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তারা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন।’

কক্সবাজার জেলায় ১২ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত 

ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে কক্সবাজার জেলায় ১২ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসবের মধ্যে ১০ হাজার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত এবং ২ হাজার সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

রোববার (১৪ মে) বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজার লাবণী পয়েন্টে সমুদ্র সৈকত পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে কক্সবাজার জেলায় কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেন্টমার্টিনে। বৃষ্টি এবং বাতাসের গতিবেগ বেশি হওয়ায় এ জেলায় প্রায় ১২ হাজার বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেন্টমার্টিনে ১ হাজার ২০০ বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’